কিয়াম করা কি জায়েজ? 

কিয়াম এর হাকিকত


ভূমিকা:- আজ বর্তমান যুগে কিছু মানুষ হাদিস কুরানের অপব্যাখ্যা করে মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যেতে তৎপর ৷  তারা মিলাদ ক্বিয়াম কে বেদাত বলে থাকেন আজ তাদের জবাব দিতে আমি লিখতে বাধ্য ৷ আজ সুধুমাত্র  আলোচনা করব ক্বিয়ামের বৈধতা সম্পর্কে ৷ প্রতিটি কথা মনযোগ সহকারে পড়ে বুঝার চেষ্টা করবেন ৷
 প্রথমে আমরা জানব ক্বিয়াম কাকে বলে এবং ক্বিয়াম কত প্রকার

ক্বিয়ামের সঙ্গা: — ক্বিয়াম আরবি শব্দ যা়র বাংলা অর্থ হল, দাঁড়ান ৷  কোন প্রয়োজনীয় এবং অপ্রয়োজনীয় কাজের জন্যে দাঁড়ান কে ক্বিয়াম বলে ৷
 ক্বিয়াম ৫ প্রকার ৷ এর প্রত্যেকটি নিম্নে বর্ণনা করা হল ৷ এইগুলি ভালকরে বুঝেনিন তাহলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের সম্মানার্থে কিয়ামের বৈধতা সম্পর্কে একটু  ধারনা আসবে ইনশা আল্লাহ ৷

ক্বিয়াম জায়েজ:- পৃথিবীর কোন প্রয়োজনীয় কর্মের জন্য ক্বিয়াম (অর্থাৎ দাঁড়ান) জায়েজ ৷
        فاذاقضيت الصّلٰواة فانتشروا فى الارض
( সুরা জুময়া) 
অর্থাৎ যখন জুম্মার নামাজ হয়ে যাবে তখন তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় ৷ দাঁড়ান ছাড়া ছড়িয়ে পড়া অসম্ভাব তাই এই প্রকার দাড়ান জায়েজ ৷
ক্বিয়াম ফরজ: — পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও ওয়াজিব নামাজের জন্য দাঁড়ান ফরজ

وقوموا لله قانتين

অর্থাৎ আল্লাহর সামনে আনুগত্যর সহিত দাড়াও৷
ক্বিয়াম সুন্নাত:– জম জমের পানি ও ওজুর অবশিষ্ট পানি পান করার জন্যে দাঁড়ান  সুন্নাত ৷ যখন কোন আপনজন ( পিতা,মাতা,চাচা,দাদা,নানা,ভাই ইত্যাদি) কাছে আসবে তখন তার সম্মানে দাড়ান ও তাকে চুম্মন করা সুন্নাত ৷
হজরত জায়েদ বিন হারেসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের দরজার খিড়কি নড়ান ৷ তখন নবী সাল্লাল্লাাহু আলাইহি ও সাল্লাম খাড়া হয়ে তার দিকে অগ্রসর হন এবং তার সঙ্গে মুয়ানাকা করেন এবং তাকে চুম্মন করেন৷  

অন্য বর্ণনায় আছে যখন হজরত ফাতিমা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের বাড়ি যেতেন তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম দাড়িয়ে যেতেন এবং চুম্মন দিতেন  এবং ফাতিমি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা এমনটাই করতেন যখন নবা সাল্লাল্লাহ আলাইহি ও সাাল্লাম তার বাড়িতে যেতেন   ( মিশকাত শরিফ আদব এর অধ্যায়)
তাহলে বুঝাগেল কোন প্রিয় বা আপনজনের সম্মানে দাড়ান সুন্নাত ৷
ক্বিয়াম মুস্তাহাব: —  নফল নামাজের জন্যে দাঁড়ান মুস্তাহাব ৷  কেও যদি বসে পড়ে তাহলে দাঁড়ানোর চেয়ে নেকি কম পাবে ৷
ক্বিয়াম মাকরুহ:– জম জম ও ওজুর অবশিষ্ট পানি ছাড় দুনিয়ার অন্য পানি অকারণে দাঁড়িয়ে পান করা মাকরুহ ৷ 

وان قام له من غير ان ينوى شيأً مما ذكرنا او قام طمعا لغناه كره له ذلك

(আলমগিরী)
অর্থাৎ  যদি কোন অমুসলিমের জন্য দাঁড়ান হয় উপর উল্লিখিত কারন ছাড়া অথবা দুনিয়ার কোন সম্পদের লোভে তাহলে এটা মাকরুহ হবে ৷
সম্পাদের লোভে দুনিয়ার কোন অমুসলিমের সম্মানে দাঁড়ান ৷

পাঠকগণ আসা করি ক্বিয়াম সম্পর্কে আপনাদের একটু একটু ধারনা এসেছে ৷ এবার নিম্নে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের সম্মানে দাঁড়িয়ে ক্বিয়াম করা জায়েজ এবং মুস্তাহাব নিম্নে দলিলগুলি লক্ষ করুন ৷
            🌻ক্বিয়াম বৈধ হওয়ার দলিল🌻
দলিল ১: – যখন সায়াদ ইবনে মায়াজ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মসজিদে নবাবীতে উপস্থত হলেন তখন নবী সাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম আনসারদের লক্ষ করে বললেন,
قوموا الى سيدكم  
অর্থাৎ তোমরা  নিজ সরদারের জন্য দাঁড়িয়ে যাও ৷  (আবু দাউদ ৫২১৫, বুখারী ও মিশকাত)
হজরত সায়াদ ইবনে মায়াজ রাদ্বিযাল্লাহু আনহু  আনসারদের সরদার ছিলেন  তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম আনসারদের তাদের সরদারের সম্মানে দাড়াতে আদেশ দিলেন৷

বুঝা গেল কোন সরদার বা সম্মানিত ব্যাক্তির  সম্মানে দাঁড়ান জায়েজ ৷

 এবার বলুন নাবী আলাইহিস্সালামের  চাইতে আর কোন বড় সরদার বা সম্মানিত ব্যাক্তি আছে ?  না বন্ধুরা আর নেই  তাহলে  সাধারন সরদারের সম্মানে দাঁড়ান যদি বৈধ হয় তাহলে বিশ্ব সরদারের সম্মানে দাড়িয়ে সালাম দেয়া কেন জায়েজ হবেনা?  ওহাবি জবাব দাও

দলিল ২:—  হজরতে আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,

فاذا قام قمنا قياما  حتى تراه قد دخل بعض بيوت ازواجه

অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম যখন মজলিস শেষ করে দাঁড়াতেন তখন আমরাও তিনার সঙ্গে দাঁড়িয়ে যেতাম ৷ যতক্ষন নবী সাল্লাল্লাহু কোন স্ত্রী ( আমাদের মা)  র বাড়ি না পৌছাতেন আমরা দাড়িয়ে থাকতাম ( ক্বিয়াম করতাম)

( মিশকাত কিয়ামের অধ্যায়)

আসা করি হাদিসটি সকলেই বুঝতে পেরেছেন আর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই ৷
দলিল ৩:–  
يجوز بل يندب القيام تعظيما للقادم يجوز القيام و لو للقاري بين يدي العالم

অর্থাৎ আগমনকারীর সম্মানে দাঁড়ান জায়েজ বরং মুসতাহাব  এবং কুর’আন পাঠকারীর জন্য তাদের শিক্ষকের সম্মানেও দাড়ান জায়েজ ( অর্থাৎ কুর’আন পাঠরত অবস্থায় যদি শিক্ষক আসে তাহলে তার সম্মানে দাড়ান জায়েজ)

একটু ভাবু সাধারন এক আলিমের জন্যে দাড়ান যদি জায়েজ হয় তাহলে নবী সাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের সম্মানে দাঁড়িয়ে সালাম দেয়া কেন জায়েজ হবেনা ৷
এছাড়া অসংখ দলিল আছে আশিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের জন্য এত টুকুই যথেষ্ট ৷

নবী (সাঃ) এর প্রতি সালাম প্রেরণ করা
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরুদ (রহমত) প্রেরণ করে থাকেন। (আল্লাহ তা’আলা বলেন) হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর প্রতি দরূদ প্রেরণ কর এবং বেশি বেশি সালাম প্রেরণ কর।

(সূরা আল আহযাব ৫৬)

পবিত্র এই আয়াতের মধ্যে আল্লাহতালা মুমিনদেরকে দুটি আদেশ করেছেন

(১) দরুদ প্রেরণ করতে বলেছেন(২) সালাম প্রেরণ করতে বলেছেন
দরুদ প্রায় সকলেই পাঠ করে থাকেন কিন্তু দুঃখের বিষয় হল সালাম প্রেরণ করতে খুব কমই দেখা যায় । প্রকাশ্যে পবিত্র কোরআনের আয়াত থাকার পরেও সালাম প্রেরণ করতে অনেকেই কৃপণতা করে আবার অনেকে বিরোধিতা ও ব্যঙ্গ করে ।
আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ আমার উপর সালাম পেশ করলে আল্লাহ আমার ‘রূহ’ ফিরিয়ে দেন এবং আমি তার সালামের জবাব দিয়ে থাকি । (সুনান আবু দাউদ হাদিস নম্বরঃ ২০৪১)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইন্তেকালের পূর্বে উম্মতদেরকে এই সুন্দর হাদিসগুলো উপহার দিয়ে গেছেন, যাতে করে কেয়ামত পর্যন্ত দরুদ ও সালাম পাঠানোর দরজা খোলা থাকে ।

কিন্তু দুঃখের বিষয় একটু লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন অসংখ্য নামধারী, পেটপূজারী ওলামায়ে কেরাম কঠোরভাবে সালাম এর বিরোধিতা করে যাচ্ছেন । তারা বলে থাকেন সালাম দেওয়ার কথা কোথাও নেই, এসব বেদাত ইত্যাদি, আপনি যদি তাদের অনুসরণ করেন বা তাদের সমর্থন করেন তাহলে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বিরুদ্ধে অবস্থান করলেন ।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা প্রকৃত মুমিন তারা বিভিন্ন পদ্ধতিতে সালাম প্রেরণ করে থাকেন । তবে সবচাইতে বেশি প্রচলিত দলিল ভিত্তিক সালাম হলো-
“ইয়া নবী সালামু আলাইকা”অর্থ হে নবী আপনার প্রতি সালাম
এটা সম্পূর্ণ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। যাদের আত্তাহিয়াতু মুখস্ত আছে তারা অবশ্যই সহজে বুঝতে পারবেন।

আমরা যখন আত্তাহিয়াতু পড়ি তখন নবীজি (সাঃ)র প্রতি সালাম দিতে গিয়ে বলে থাকি । السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ হে নবী আপনার প্রতি সালামأَيُّهَا النَّبِيُّএর সমার্থক শব্দ হলোঃ
( يا نبى)
আরবি গ্রামার অনুযায়ী দুটো একই অর্থ বহন করে এরমধ্যে আংশিক পরিমাণ কোন পার্থক্য নেই ।
তাছাড়া আপনি অন্য কোনভাবে সালাম দিতে পারেন যেমন –(১) আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুল আল্লাহ(২) মোস্তফা জানে রহমত পে লাখো সালাম(৩) আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া নাবিয়্যাল্লাহ(৪) ইয়া রাসুল সালাম আলাইকা । ইত্যাদি
বিঃ দ্রঃ – প্রিয় পাঠক ভ্রান্ত আকিদা থেকে আমাদের বাচতে হবে ৷ অপব্যাখ্যায় কর্নপাত না করে সঠিক আকিদার সন্ধানে অগ্রসর হন ৷  
আ.কাদেরী
 




এ আয়াতে যা বলা হয়েছে লক্ষ করুন---

নিশ্চয় আল্লাহ নবীর প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফিরিশতাগণও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে বিশ্বাসীগণ! তোমরাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা কর এবং তাকে উত্তমরূপে অভিবাদন কর। (দরূদ ও সালাম পেশ কর।)

তাফসীর সহ তুলে ধরা হল

[১] এই আয়াতে নবী (সাঃ)-এর ঐ সম্মান ও মর্যাদার কথা বর্ণনা করা হয়েছে, যা আসমানে উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন ফিরিশতাগণের নিকট বিদ্যমান। তা এই যে আল্লাহ তাআলা ফিরিশতাগণের নিকট নবী (সাঃ)-এর সুনাম ও প্রশংসা করেন এবং তাঁর উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফিরিশতাগণও নবী (সাঃ) এর উচ্চমর্যাদার জন্য দু'আ করেন। তার সাথে সাথে আল্লাহ তাআলা বিশ্ববাসীদেরকেও আদেশ করেছেন, যেন তারাও নবী (সাঃ)-এর প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠ করে। যাতে নবী (সাঃ)-এর প্রশংসায় ঊর্ধ্ব ও নিম্ন দুই বিশ্ব একত্রিত হয়ে যায়। হাদীসে বর্ণনা হয়েছে যে, সাহাবায়ে কিরামগণ আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সালামের নিয়ম তো আমাদের জানা আছে (অর্থাৎ তাশাহহুদে 'আসসালামু আলাইকা আইয়ুহান্নাবিয়্যু' পড়ি) কিন্তু আমরা দরূদ কিভাবে পড়ব? এর উত্তরে তিনি দরূদে ইবরাহিমী -- যা নামাযে পাঠ করা হয় তা বর্ণনা করলেন। (বুখারীঃ তাফসীর সূরা আহ্যাব) এ ছাড়া হাদীসে দরূদের আরো অন্য শব্দ বর্ণিত হয়েছে, সেগুলিও পাঠ করা চলবে। সংক্ষেপে 

(صَلَّى اللهُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ وَسَلَّم) পাঠ করা যাবে। পক্ষান্তরে

 (اَلصَّلَوةُ وَالسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ) পাঠ করা এই জন্য ঠিক নয় যে, এতে নবী (সাঃ)-কে সরাসরি সম্বোধন করা হয় এবং এই শব্দগুচ্ছ সাধারণ দরূদে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত হয়নি। আর যেহেতু তাশাহহুদে 'اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ اَيُّهَا النَّبِيُّ' শব্দ নবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে সেহেতু (তাশাহহুদে তা পাঠ করাতে কোন দোষ নেই। তা ছাড়া

 (اَلصَّلَوةُ وَالسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ) পাঠকারী এই বাতিল বিশ্বাস নিয়ে পাঠ করে যে, নবী (সাঃ) তা সরাসরি শ্রবণ করেন। এই বাতিল বিশ্বাস কুরআন ও হাদীসের পরিপন্থী। সুতরাং এই আকীদা নিয়েও নিজেদের মনগড়া দরূদ পাঠ করা ঠিক নয়। অনুরূপ আযানের পূর্বে তা পাঠ করাও বিদআত, যাতে সওয়াব নয়; বরং গুনাহ হয়। হাদীসে দরূদের বড় গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। নামাযে তা পাঠ করা ওয়াজেব না সুন্নত? অধিকাংশ উলামাগণ বলেছেন সুন্নত এবং ইমাম শাফেয়ী ও আরো অনেকে তা ওয়াজেব বলেছেন। তবে একাধিক হাদীসে তার ওয়াজেব হওয়ারই সমর্থন পাওয়া যায়। অনুরূপ হাদীস দ্বারা এটাও বোঝা যায় যে, যেমন শেষ তাশাহহুদে দরূদ পড়া ওয়াজেব তেমনই প্রথম তাশাহহুদেও দরূদ পাঠ করা ওয়াজেব। নিম্নে তার কতিপয় দলীল দেওয়া হলঃ- প্রথম প্রমাণ এই যে, মুসনাদে আহমাদে সহীহ সানাদে বর্ণিত হয়েছে যে, এক ব্যক্তি নবী (সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সালামের নিয়ম তো আমাদের জানা আছে (অর্থাৎ তাশাহহুদে 'আসসালামু আলাইকা আইয়ুহান্নাবিয়্যু' পড়ি) কিন্তু আমরা নামাযে দরূদ কিভাবে পড়ব? এর উত্তরে তিনি দরূদে ইবরাহিমী শিক্ষা দিলেন (আল ফাতহুর রাববানী ৪/২০-২১) মুসনাদে আহমাদ ছাড়াও উক্ত হাদীস সহীহ ইবনে হিববান, সুনানে কুবরা বায়হাকী, মুস্তাদরাক হাকেম এবং ইবনে খুযায়মাতে বর্ণিত হয়েছে। এতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, যেমন তাশাহহুদে সালাম পড়া হয় অনুরূপ উক্ত প্রশ্নও নামাযের ভিতরে দরূদ পাঠ সম্পর্কে ছিল, উত্তরে নবী (সাঃ) দরূদে ইবরাহিমী পড়ার আদেশ দিয়েছিলেন। যাতে বোঝা যাচ্ছে যে, সালামের সাথে দরূদও পড়া দরকার এবং তা পড়ার স্থান হল তাশাহহুদ। আর হাদীসে তা সাধারণভাবে বর্ণনা হয়েছে। প্রথম বা দ্বিতীয় তাশাহহুদের সাথে নির্দিষ্ট করা হয়নি। যার ফলে বলা যায় যে, প্রথম ও দ্বিতীয় উভয় তাশাহহুদেই সালাম ও দরূদ পড়তে হবে। যে বর্ণনাগুলিতে প্রথম তাশাহহুদ দরূদ ছাড়া উল্লেখ হয়েছে সেগুলিকে সূরা আহযাবের আয়াত 'صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا' অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বের ধরা হবে। কিন্তু উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর অর্থাৎ পঞ্চম হিজরীর পর যখন নবী (সাঃ) সাহাবায়ে কিরামগণের প্রশ্নের উত্তরে দরূদের শব্দও বর্ণনা করে দিলেন, তখন নামাযে সালামের সাথে দরূদ পড়াও জরুরী হয়ে গেল, চাহে তা প্রথম তাশাহহুদ হোক বা দ্বিতীয়। আরো একটি প্রমাণ হল, আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, "নবী (সাঃ) কখনো কখনো রাত্রে নয় রাকআত নামায পড়তেন, আট রাকআতে যখন তাশাহহুদে বসতেন, তখন তাতে তাঁর প্রভুর নিকট দু'আ করতেন এবং তাঁর পয়গম্বরের উপর দরূদ পড়তেন তারপর সালাম না ফিরে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং নয় রাকআত পূর্ণ করে পুনরায় তাশাহহুদে বসতেন, তাঁর প্রভুর নিকট দু'আ করতেন এবং তাঁর পয়গম্বরের উপর দরূদ পড়তেন এবং পুনরায় দু'আ করতেন, তারপর সালাম ফিরতেন। (বায়হাকী ২/৭০৪, নাসাঈ ১/২০২, বিস্তারিত দেখুনঃ আল্লামা আলবানীর সিফাতু সালাতিন্নাবী ১৪৫ পৃষ্ঠা) উক্ত বর্ণনায় পরিষ্কার উল্লেখ আছে যে, নবী (সাঃ) তাঁর রাত্রের নামাযে প্রথম ও শেষ উভয় তাশাহহুদে দরূদ পড়েছেন। এটা যদিও নফল নামাযের কথা ছিল; তবুও নবী (সাঃ)-এর উক্ত আমল দ্বারা উল্লিখিত ব্যাপক দলীলসমূহের সমর্থন হয়। যার ফলে তা শুধু নফল নামাযের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা ঠিক নয়

আরো তথ্য পাওয়ার জন্য >>>নিচের লিংকে ক্লিক করুন 









Comments